হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমান বিশ্বের সাত আট টি দেশের কাছে পরমাণু বোমা মজুত রয়েছে। অনেক ই মনে করেন যে, পরমাণু বোমা সামরিক শক্তির ভরকেন্দ্র। এবং কোন দেশ পরমাণু বোমা সমৃদ্ধ দেশ হলে অন্যদের কে শঙ্কিত ও সন্ত্রস্ত করে রাখা সম্ভব। সুতরাং মধ্যপ্রাচ্যের মূল সংকট থেকে মুক্তির লক্ষ্যে ইরান যেহেতু সদা তৎপর, তাই ইরানের উচিত দ্রুত পরমাণু বোমা তৈরির কাজ সুসম্পন্ন করা। কিন্তু ইরান পরমাণু বোমা তৈরির বিষয়ে উদাসীনতা করছে কেন? আসুন এর উত্তর খোঁজা যাক।
পরমাণু বোমা না বানানোর যুক্তি:
ইরান দেশটির কর্মকর্তারা নিজেদেরকে "ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান" বলে (১৯৭৯খ্রিঃ বিপ্লবের পর থেকে) পরিচিত করান। এবং বাস্তবিক ই ইরান ইসলামের যাবতীয় নিয়ম-নীতি মেনেই শাসিত হচ্ছে।এই কারণেই ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা ভয়ঙ্কর ধ্বংস ক্ষমতা সম্পন্ন পারমাণবিক বোমা তৈরি ও ব্যবহার কে হারাম বলে ঘোষণা করেছেন। ইরানে কোনো সময় পর্বের প্রশাসন যদি কোনো পরিস্থিতি র পরিপ্রেক্ষিতে প্রচণ্ড মারণ ক্ষমতা সম্পন্ন এই বোমা হঠকারি সিদ্ধান্তের কারণে ব্যবহার করে ,তবে ইসলামী নীতি-নিয়ম প্রশ্নের সম্মুখীন হবে। সুতরাং যা ব্যবহার করা যাবে না,তা তৈরি করার মানে হলো অর্থ অপচয় করা বা তা তৈরি করা এক কথায় নিরর্থক।তাই ইরান পরমাণু বোমা তৈরি করে না।
দ্বীনে ইসলাম একটি সুস্থ, সুন্দর ও সুপরিকল্পিত ধর্ম।এই ধর্মে ধ্বংস নয়,মানবতাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।তাই ভয়ঙ্কর মারণ ক্ষমতা সম্পন্ন পরমাণু বোমা বানানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ইরানী সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা এটাই ইশারা দিয়েছে যে, ইসলাম কখনোই গণহারে হত্যা ও ধ্বংস র কথা বলে না। ইসলাম শান্তির কথা বলে এবং এ এক অনবদ্য শান্তি র ধর্ম। ইরান পরমাণু বোমা বানানো নিষিদ্ধ করে বিশ্বকে আরও একবার এই গভীর বার্তা দিতে চেয়েছেন।
পরমাণু বোমার কার্যকারিতা ও ব্যবহার:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সর্বপ্রথম আমেরিকা পরমাণু বোমা ব্যবহার করে।তারপর থেকে আজ অবধি অসংখ্য যুদ্ধ সংগঠিত হলেও কোনো দেশ ই পরমাণু বোমা ব্যবহার করেনি। বিভিন্ন সময় পরমাণু হামলার হুমকি দিয়েছে মাত্র। বাস্তবতা হলো কোনো দেশ বর্তমান সময়ে নানা পরমাণু বোমা কারণে ব্যবহার করতে পারবে না। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক
সম্প্রদায়ের চাপ এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও একঘরে হয়ে যাওয়ার প্রবল ঝুঁকি রয়েছে। আমেরিকার মতো সাম্রাজ্যবাদী শক্তিও যদি এই বোমা ব্যবহার করে তবে ঘরে বাইরে প্রবল চাপ এবং আমেরিকার ভাবমূর্তি এতটাই খারাপ হয়ে পড়বে যে ,তা আর পুনরুদ্ধার সম্ভব নয় ( দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকা এই বোমা যখন ব্যবহার করে,তখন পরিবেশ ও পটভূমি সম্পূর্ণ আলাদা ছিল)।
ইরান কি কখনো পরমাণু বোমা বানাবে না:
ইসলামী নীতিমালা অনুযায়ী ইরান কখনো পরমাণু বোমা বানাবে না। তবে যদি কখনো ইরান আক্রান্ত হয় বা ইরানের পরমাণু স্থাপনা আক্রান্ত হয়,তবে নিজেদের রক্ষা করার জন্য সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা পরমাণু বোমা বানানোর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারে। গত কয়েকদিন আগে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার উপদেষ্টা এমন ই ইঙ্গিত দিয়েছেন। ইসলামে মিথ্যা বলা হারাম; কিন্তু জীবন বাঁচানোর জন্য মিথ্যা জায়েজ আছে। অনুরূপ পরমাণু বোমা বানানো হারাম, কিন্তু দেশকে রক্ষা করার জন্য পরমাণু বোমা বানানোর ক্ষেত্রে ছাড় দেবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
রাজা আলী
০৯.০৪.২০২৫
আপনার কমেন্ট